ঢাকা: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনার মো: আলমগীর বলেছেন , আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দেশের কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে । সিটিগুলো হচ্ছে – গাজীপুর , রাজশাহী , সিলেট , বরিশাল ও খুলনা।
রবিবার (০৫ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকের অন্যান্য প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিলের ব্যাপারে কোনো আলাপ – আলোচনা হয়নি আমাদের । আলোচনা হয়েছিল গাজীপুর, রাজশাহী , খুলনা , সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে । মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬মাসের মধ্যেই এ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন করতে হয়। আগ্রহ করলেই ৬ মাসের মধ্যেই তা শেষ করা যায় । এ সময়ের মাঝামাঝি করা যায় ,আবার আগে ও করা যায় ।
তিনি বলেন , আমাদের জাতীয় নির্বাচন আছে এ বছরেরই ডিসেম্বর মাসের শেষে বা জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে সেজন্যই আমাদের যথাযথ প্রয়াস থাকবে এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একেবারে শেষের দিকে না করে প্রথম দিকেই করা। তাই আমরা সেটাই করবো । গাজীপুরের বিষয়টি শুধুমাত্র এটুকুই আলোচনা হয়েছে,তফসিল কবে হবে এ ধরণের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি ।
নির্বাচন কমিশনার বলেন , ১১মার্চ – ১০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে ভোটের সময় । যেকেোনো সময়েই এ নির্বাচন হতে পারে। সে হিসেবেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে । সেজন্য নির্বাচনগুলো দ্রুত আগে করার চেষ্টা করবো । মার্চ মাসের পর পরই যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে ।
গাজীপুর ব্যতীত অন্য চার সিটির ভোট একদিনে হবে কিনা , এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন , একদিনে হবে না। সর্বমোট ছয়টা সিটি আছে । এরমধ্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনেক দেরি । এটাকে আমরা এরই মধ্যেই আনছি না । বাকি পাঁচটার মধ্যে হয়তো বা দুই দিনে হতে ও পারে । আবার তিনদিনেও হতে পারে । জুন মাসের মধ্যেই দুটি সিটি ভোট করার ইচ্ছা আছে । কিন্তু তা এখনো পর্যন্ত কোনো দিন তারিখ ঠিক হয়নি । তেমন চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি । যেগুলোর সময় আগে গণনা শুরু হবে অতঃপর তা-ই আগে হবে ।
এদিকে গাজীপুরে স্থানীয়ভাবে তফসিল ঘোষনা করা হয়েছে বলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম্যে প্রচার হচ্ছে, এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন , গাজীপুর নিয়ে আমরা (কমিশন ) কোনো তফসিলই ঘোষনা করা হয়নি । জুন মাসের আগেই দুই একটা সিটি ভোট হবে ,বাকিগুলো জুনের পরে । অতএব সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সিটি ভোট শেষ হয়ে যাবে ।
সিটি নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রন থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন , এসব নির্ভর করবে বাজেটের উপরে । আমরা তার জন্য যথারীতি বাজেট ও চাইবো । টাকা পেলে অবশ্যই আমরা সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করবো । তবে তা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম ) দ্বারা ব্যবহার করার আগ্রহ আছে ,এটাও নির্ভর করবে । নতুন ইভিএম এখনো আসেনি। পূর্বের ইভিএমগুলোর ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে , তাই পুনরায় ব্যাটারির রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে এমনকি তা সার্ভিসিং করাতে হবে। সেজন্যও টাকা লাগবে । সার্ভিসিং করে যদি তা সচল করতে পারি তার উপরে নির্ভর করবে কতগুলো ইভিএম ব্যবহার করবো । কমিশনের পুরোপুরি ইচ্ছা ইভিএমে করা ।
সরকারের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার ওপরই সিসি ক্যামেরা নির্ভর করছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, সিসি ক্যামেরা ভোটের কোনো অনুষঙ্গ নয় । আইনে তা কোথাও বলা হয়নি সিসি ক্যামেরা রাখতেই হবে । এটি অতিরিক্ত ব্যবস্থা এবং তা নিতান্তই পরীক্ষামূলক ছিল । টাকা পেলে সব আসনে না করলেও মারাত্মকভাবে ঝূকিপুর্ণ আসনে করবো । মূলত সরকার থেকে আমরা এখনো কোনো রকমের প্রতিক্রিয়া পাইনি । বিরোধী দলের মন্তব্য থাকতেই পারে। দলের সাথে সরকারের মন্তব্যের সম্পর্ক করা যাবে না । অতএব সরকার কিংবা দল কিন্তু এক নয় ।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইনানুযায়ী, যে কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয়ে থাকে মূলত প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর সময়কাল ব্যাপী । যেকোনো সিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহন করা হয় ।
গাজীপুর সিটির পরবর্তী ভোটের সময়ের গণনা শুরু হবে ১১মার্চ । ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে । খুলনা ও রাজশাহী সিটির সময় ও গণনা শুরু হবে ১৩ এপ্রিল , ১০ অক্টোবরের মধ্যেই ভোট গ্রহন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছৈ ।
এছাড়াও বরিশাল সিটি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হবে ১৪ মে, ভোট গ্রহন করতে হবে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে। সিলেট সিটির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে ৬ মে থেকে ৬ নভেম্বরের মধ্যে। আর ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন করতে হবে ২০ ডিসেম্বর থেকে, এমনকি আগামী বছরের মধ্যেই ১৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।