বর্তমানে আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষই বিভিন্ন কারণে অনেক সময় পরিস্থিতির শিকার হয়ে আইনের সহায়তা নিতে বাধ্য হয় । সাধারণ নথি বা জিডি থেকে শুরু করে হত্যা মামলা , অপরাধের মামলা করার জন্য মূলত আইনের সহায়তা নিতে হয় ।
কিন্তু আইনের এ জামেলায় পড়ার পূর্বমূহুর্ত অবধি কীভাবে আইনের সাহায্য নেওয়া যায় এবং কোথায় কী করতে হবে এ বিষয় সম্পর্কে কারো কোনো বেসিক ধারণা থাকে না ।
পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা কীভাবে গ্রহন করতে হবে সে ব্যপারে বিস্তারিত তথ্যের মাধ্যমে তা আলোচনা করা হলো ।
চুরি – ডাকাতি ,হুমকি , হত্যা ও জানমালের যেকোনা অনিরাপত্তা ঘটলেই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে পুলিশকে জানানো আবশ্যকীয় ।
ঢাকা মহানগরের পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেছেন, মানুষের যেকোনো বিপদে সর্বপ্রথম একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমই পুলিশ । জনগনকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য স্থাণীয় থানার ওসি , কর্মরত অফিসার , থানার নম্বর সহ সবার নিকট সংগ্রহ করে রাখা উচিত । এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে কর করার সুবিধা রয়েছে । নিজে কোনো প্রকার বিপদের সম্মুখীন হলে বা কোনো অপরাধের আলামত পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষনিক সরাসরি পুলিশর নিকট জানানো উচিত । নাহয় তা নিজের জীবনের জন্য মারাত্মক ভাবে ঝুকিপূর্ণ হতে পারে ।
তিনি আরো ও বলেছেন, যদি কোন কারণে স্থানীয় থানা থেকে দ্রুত সহায়তা পেতে বিলম্ব হয় অতঃপর দ্রুত সেখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানাতে পারেন।
যদি কোথাও অপরাধ সংঘটিত হয় তাহলে উক্ত ঘটনাস্থলের অপরাধী সম্পর্কে প্রত্যক্ষদরশী বাদী হয়ে সাক্ষী দিতে পারবেন । এমনকি তা পুলিশকে জানালে তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে । ।
সাধারণ ডায়েরি বা জিডি সংক্রান্ত বিষয়
একমাত্র সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির আইনগত পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে প্রাথমিক এবং অতি সাধারণ একটি বিষয় হচ্ছে জেনারেল ডায়েরি বা জিডি ।
যেমন কারো কিছু হারিয়ে গেলে , পুলিশকে প্রাথমিক তথ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট জানানোর জন্য এ জিডি প্রক্রিয়া বা সাধারণ ডায়েরি করা হয়ে থাকে । এ জিডি মূলত কারো সম্পর্কে সরাসরি অভিযোগের মামলা না করে ও এ জিডি করা হয়ে থাকে।
জিডি করার জন্য নিজের জেলার স্থাণীয় থানায়ই করতে হবে । নিজের বাসা বা কর্মস্থল যেখানেই হোক না তা যে এরিয়াতে ঘটেছে , সে জায়গারই স্থাণীয় থানাতে জিডি করতে হবে । নাহয় উক্ত এরিয়া ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে এ জিডি করা যাবে না ।
আবার কাগজে লিখিত বরাবর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা , স্থাণীয় থানা কর্তৃক ,বিষয় : সাধারণ নথি সম্পর্ক নিয়ে লিখে এর বিবরণ জিডিতে আাবেদন লিখতে হয় । কেননা যে ব্যক্তি জিডি করতে যাবেন তার নাম ,ফোন নাম্বার সহ সকল তথ্য বিস্তারিত প্রদান করতে হবে। আবার যে জিনিস হারিয়ে গেছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য থাকতে হবে ।
পাশাপাশি নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র আইডি কারডসহ প্রয়োজনীয় দলিল ইত্যাদি ভুলবশত হারিয়ে গেলে নিজের একটি ফটোকপি সংযোগ করতে ও হতে পারে।
তাই এমন দুটি কপি সাথে নিয়ে নিজ এরিয়ার স্থানীয় থানায় গেলে জিডি ফাইলে সংগ্রহ করে এতে নম্বর বসিয়ে এক কপি জিডি করা ঐ ব্যক্তিকে তার নিকট দিয়ে দেওয়া হয় ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মোঃ ওয়ালিদ হোসেন বলেছেন, নিয়ম অনুসারে সকল জিডির অনুসন্ধান হওয়ার কথা । কেননা প্রতিটি জিডি সঠিকভাবে অনুসন্ধান করেই একটি প্রতিবেদন পেশ করতে হয় ।
তাছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো জরুরি বিষয় না হলে তা হারিয়ে যাওয়ার ন্যায়ও এ বিষয় সম্পর্কে ও প্রাথমিকভাবে পরে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না ।
বর্তমানে যে কেউ চাইলেই বিনা খরচে ঘরে বসেই জিডি আবেদন করতে পারবে ।
মামলা বিষয় সম্পর্কে জানা
মামলা দ্বারা বুঝায় , বিশেষ কোনো ঘটনার আইনের আওতায় বিচার পাওয়ার যথাযথ প্রয়োগ । মামলা করার কিছু পদ্ধতি ও রয়েছে । যেমন ফৌজদারী মামলা বা অপরাধী মামলার কেস থানায় এমনকি আদালতে ও দায়ের করা হয়ে থাকে । পাশাপাশি দেওয়ানী মামলা বা সিভিল কেস এ গুলোও আদাতে পেশ করা হয়ে থাকে । এ মামলার কার্যক্রমের সাহায্যের জন্য সবসময় আইনজীবীদের সহায়তা ও নে্ওয়া যায় । আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হালিমা ফেরদৌস বিবিসিকে বাংলাকে বলেছেন , খুন – হত্যা , ধর্ষণ , নির্যাতন, অপহরণ ও হুমকি , অগ্নিংযোগ ,চুরি , ছিনতাই এসবের মতো হাজারো ঘটনায় ফৌজদারি মামলা করা হয়।
জায়গা – জমিজমা সংক্রান্ত, সম্পত্তি , পারিবারিক বিরোধ অর্থ সংক্রান্ত বিরোধ, মানহানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেওয়ানী মামলা করা হয়।‘’
তিনি আরোও বলেছেন , কোনো ফৌজদারি মামলা ঘটনার পরিস্থিতিতে পড়লে স্থাণীয় থানার
সহযোগিতা নেওয়া প্রয়োজন। আর এখানেই তাদের মামলা করতে হবে । পুলিশ তাদের মামলাটি পর্যবেক্ষন করার মাধ্যম্যে তা আদালতে প্রতিবেদন পেশ করবে এবং অভিযুক্ত আসামীদের বিরদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিযে তাকে গ্রেপ্তার করবে । অতঃপর তার উপযুক্ত বিচার কাজ আরম্ভ হবে ।
এছাড়া ও থানা পুলিশ যদি কোনো কারণবশত মামলা নিতে অবহেলা করে থাকে তাহলে ঐ ভুক্তভোগী সরাসরি আদালতে মামলা করতে পারবে । আদালত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে সে থানাকেই এজাহারের নিদের্শ দিবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ।
থানায় মামলা সম্পর্কিতি বিষয়াদি
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মোঃ ওয়ালিদ হোসেন বলেছেন , অযথা কোনো কারণ ব্যতীত থানার কর্মকর্তারা মামলা নিতে অবহেলা বা গাফেলতি করার কোনো কথাই আসে না । যদি এরপরে ও এমন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে সেখানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জানাতে পারেন । অবশ্যই তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবেন । তিনি আরো ও জানান, মামলা করার জন্য অবশ্যই অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে । তাদের নিকট উক্ত ঘটনার বর্ণনা বলতে হবে এবং আলামতগুলো যাতে অদৃশ্য না হয়ে যায় সেদিকে ও খেয়াল রাখতে হবে ।
উক্ত যে ধরণের সাদা কাগজে অভিযোগকারীর বিষয়ৈ এটাই স্পষ্ট যে , যাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে সে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা সব লিখে যে অভিযোগ করা হয়ে থাকে , মূলত তাকেই এজাহার বলে থাকে । তবে থানার মধ্যে যে রেকর্ড থাকে তা বইতে এ এজাহার কে যুক্ত করে নথির আওতা ভুক্ত করা হয় , মূলেত এটার নামই হলো এফআইআর বা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট।
তাছাড়া পরের তদন্তে কারো কোনো নাম পাওয়া গেলে এমনকি আরোও কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সেটাও এফআইআর ও এজাহারের উভয়ের সাথে মিলিত করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে , যে কোনো ধরনো মামলার জন্য আলামত রাখা, হাতে প্রমান রাখা এগুলো অনেক জরুরি বিষয় বলে মনে করেন । যেমন হত্যার মামলায় দেখা যায় যে আলামত গোপন করে পেলেন যার জন্য সঠিক ভাবে তদন্ত বের করতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় ।
প্রায় সময় দেখা যায় , মূল অভিযোগকারীকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পুলিশ বাদী হয়ে ও মামলা দিয়ে থাকেন । আবার তারা মামলার খুব কম দেখানোর জন্য তানার কর্মকর্তারাই এসব ঘটনা ঘটলে মামলা না করতে বলে জিডি করার কথই বলেন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে। এজন্য খুক্ত ভোগীর উচিত যথাযথ আইনের ব্যবস্থা গ্রহন করা। কারণ আমরা জানি যে আইনের চোখে সবাই সমান ।